সুস্থ ছেলেকে প্রতিবন্ধী দেখিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান। তাকে এ কাজে সহায়তা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্য
বসায় প্রশাসন অনুষদের তৎকালীন ডিন ও সদ্য বিএসইসি থেকে পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড অনুযায়ী নজিবুর রহমানের ছেলে ফারাবি এন এ রহমান প্রতিবন্ধী হিসেবে তার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। বিভাগটিতে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতেও চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সন্তোষজনক ফলাফল না থাকায় তিনি নিয়োগ পাননি। ফারাবির সহপাঠী, শিক্ষক ও পরিচিতজনরা জানিয়েছেন, তিনি কখনো শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছিলেন না।
সূত্রমতে, ফারাবি ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি আবেদন করেন। ভর্তি আবেদন ফরমে দুটি ইউনিটের কোনোটিতেই তিনি প্রতিবন্ধী কোটার পাশে টিক চিহ্ন দেননি। ওই বছরের ১৬ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১৪৫ দশমিক ৫৬ স্কোর পেয়ে ২ হাজার ৭৩৫তম মেধাক্রমে উত্তীর্ণ হন তিনি।
ইউনিটটিতে ভর্তিযোগ্য আসন ছিল ১ হাজার ১৭০টি। মেধাক্রম অনুযায়ী ফারাবির বিভাগ পাওয়ার কথা না। কিন্তু তিনি ভর্তি হয়েছেন শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা ফিন্যান্স বিভাগে। এক্ষেত্রে নিয়ম ভেঙে তার ভর্তি দেখানো হয়েছে ‘শ্রবণ প্রতিবন্ধী’ কোটায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, আমি ওদের ব্যাচের কোর্স পড়িয়েছিলাম। ও ক্লাসে ভালোই রেসপন্স করতো। ওর প্রেজেন্টেশন দেখেছি। ক্লাসের বাইরেও সামনাসামনি ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওর কানে কখনো হিয়ারিং এইড (শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র) দেখতে পাইনি।
তার আরেক সহপাঠী বলেন, সে আমাদের সঙ্গে স্বাভাবিক চলাফেরা করতো। তার মধ্যে শ্রবণ প্রতিবন্ধীর কোনো লক্ষণই ছিল না।
নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তির বিষয়গুলো যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট অনুষদের। ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর প্রবেশপত্র দেখানো সাপেক্ষে নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করতে হয়। ওই ফরম পূরণ করে তার সঙ্গে প্রতিবন্ধী কোটা সঠিকতার সনদ জমা দিতে হয়। পরবর্তীতে ডিন অফিসের নির্দিষ্ট কমিটি কোটার বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে কোটায় ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের একটি আলাদা তালিকা পাঠায়। তার ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন ও ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
0 Comments